Saturday, October 22, 2016

একটি হৃদয়বিদায়ক গল্প

আমার বয়স যখন মাত্র ষোল বছর।তখন বিয়ে করি
এক তের বছরের মেয়েকে।
বাবা মার ইচ্ছেতেই বিয়ে হয়েছিল আমাদের।
নিজেই লুঙ্গি সামলে রাখতে পারতামনা,রাতে ঘুমুলে
গিট্টু দিতাম।অথচ সেই আমি তখন চেষ্টা করতাম
ছোট্ট বউটাকে শাড়ি পরিয়ে দিতে।
নিজেই পেতামনা পকেট খরচের টাকা,অথচ বউয়ের
জন্য আচার কিনতে হত।
খুব সুন্দর ছিলো দিনগুলি।ভালবাসা যেন অজান্তেই
তৈরি হয়েগেল মনের ভিতর।প্রথম কেউ বলতে
সেই ছিল আমার জীবনে।
সে ছিল খুব ছোট,হাসত খেলত।বাবা মা তার কান্ড
দেখে হাসতেন।
আমিও হাসতাম এইভেবে যে এটাই আমার বউ।
ছোট্ট মিষ্টি সোনা বউ।সারাদিন হৈহুল্লোড়ে
থেকে যখন রাতে সে বলত মাথা ব্যাথা করছে,মাথা
টিপে দিতাম।পা দুটোও টিপে দিতাম।আমার বউতো,
আমিই তো তারসব।আজ অবুজ কালতো বুঝবেই।
তখন আরোবেশি ভালবাসবে আমাকে।
,
দিন যেতে থাকলো।বউয়ের বয়স যখন
সতের,এখন আর সে হাসেনা খেলেনা।এখন
অনেক কিছুই বোঝে সে।শ্বশুর বাড়িতে
গেলে একাকি থাকতাম আমি।
সে আমায় বলত, তুমি আমার সাথে বেড়ুবেনা,আমার
লজ্জা করে।
কিছু বলতামনা,কষ্ট লুকিয়ে রাখতাম।
আসার সময় বায়না ধরত তাকে রেখেযেতে।
রেখে আসতাম।বাড়ি এসে প্রতিদিন ফোন করতাম
তাকে।প্রতিটা কলই ওয়েটিং থাকত।মেসেজ গুলোর
উত্তর না পেয়ে লজ্জায় আর মেসেজ করতামনা।
তিনমাস পর যখন শ্বশুরবাড়ি যেতাম বউয়ের
প্রথমবাক্য ছিলো তিনদিন থেকে চলেযাবে।
রাতের আধারে চুপিচুপি তার ফোনটা অনকরে
দেখতাম
প্রতি মিনিটে কারো প্রেমময় মেসেজে চাপা
পরেছে আমার মেসেজগুলো।
কষ্ট পেতে থাকলাম আমি।সবাইকে বলে শাসন
করাহল তাকে।সেই থেকেই শুরু।
,
তারপর আমার বউয়ের বয়স যখন উনিশ,আমার বয়স
তখন বাইশ।একটা মেয়ে এল কোলজুড়ে।
আনন্দের সীমা ছিলনা আমার,আমার পরিবারের।
তারপর মেয়ের বয়স যখন মাত্র ছমাস।আধো
আধো দুএকটা শব্দে ডাকে আমার মেয়ে।যখনি বাবা
বলে ডাকদিত কলিজা যেন ঠান্ডা হয়েযেত আমার।বউ
তখন অন্য দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত।তখনো ফোনে কথা
বলত বুঝতাম।আমার প্রতি দুর্ব্যবহারই সেটা প্রমাণ
করেদিত।কিন্তু মেয়ের কথাভেবে কিছু বলতামনা।
তারপর এলো সেদিন,যেদিন আমি কেঁদেছিলাম।স্বামী হয়ে তার দুটো পা জড়িয়ে ধরেছিলাম।ভিক্ষে
চেয়েছিলাম মেয়ের মা ডাকার অধিকার।কিন্তু সে
আমাকে ত্যাগকরে চলেগেল।৩ টা ৩৮ মিনিটে সই
করলাম ডিভোর্স পেপারে। সে নতুন ভালবাসার
মানুষকে নিয়ে চলেগেল অনেক দুরে।মাহারা হল
আমার মেয়েটা।
,
আমার মেয়ের বয়স যখন দশবছর।নিজহাতে তাকে
আমি শাড়ি পরাতাম।ও যখন ছোটতে কাঁদত মারজন্যে
ওকে কোলে তুলে নিজেও কাঁদতাম।মার অভাব কি
কখনো পুরনহয়?।নিজের মাকে ডাকতে গিয়ে
কান্না আসত আমার।আমার মেয়ের যে মা নেই।ও
ডাকবে কাকে?
রান্না করতাম,সাজিয়ে দিতাম নিজে।আমি আর মেয়ে
এই আমার দুনিয়া।
এই আমার পৃথিবী। আর বিয়ে করিনি। কারন ভালবাসতাম
তাকে,তখনো এখনো।
মেয়ের বিয়ের কথা চলছে।আমি আবার একাহয়ে
যাবো।মেয়ের অনিচ্ছা সত্বেও ওর মাকে খবর
দিয়েছি।
কাল এসেছিলো সে।অনেকদিন পর দেখলাম
তাকে।ছমাস তিনদিন, বাইশ মিনিট কম চব্বিশ বছর
পরদেখলাম।কল্পনায় ভেবেছিলাম এখনো সেই
ছোট্টই আছে।কিন্তু নাহ,আমার মতই চুলে পাক
ধরেছে ওর।দুটো ছেলের মা আজ ও।
আমি সেদিন ভালোবাসার কাছে হারমেনে
জিজ্ঞেস করেছিলাম কেমন আছো?আজো কি
তোমার মাথা, পা ব্যাথা করে? সে শুধু মাথা
নেড়েছিল।কি বুঝিয়েছে তা দেখতে পাইনি। কারন
চোখদুটো তখন জলে ভেজা ছিল।তাছাড়া বয়স
তো আর আগের মতনেই।
কিন্তু আমার মেয়ে দেখা করেনি ওরসাথে।পর্দার
আড়াল থেকেই একটা প্রশ্ন করেছিল আমার
মেয়ে,
আমার বাবার চব্বিশটা বছর ফিরিয়ে দিতে পারবেকি?
যদি নাপারো তাহলে এসোনা কোনদিন।আমার বাবাই
আমার মা।আমি প্রাউডফিল করি বাবা ডেকে।মা ডাকার
কোন ইচ্ছেনেই আমার,,,,(সংগৃহিত)

Thursday, October 20, 2016

জিহাদে শহিদ ব্যেক্তি জান্নাতি।

(1)১৩০২। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ সে ব্যক্তির (রক্ষণাবেক্ষণের) দায়ভার গ্রহণ করেন, যে ব্যক্তি তাঁর রাস্তায় বের হয়। (আল্লাহ বলেন,) ‘আমার পথে জিহাদ করার স্পৃহা, আমার প্রতি বিশ্বাস, আমার পয়গম্বরদেরকে সত্যজ্ঞানই তাকে (স্বগৃহ থেকে) বের করে। আমি তার এই দায়িত্ব নিই যে, হয় তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাব, না হয় তাকে নেকী বা গনিমতের সম্পদ দিয়ে তার সেই বাড়ির দিকে ফিরিয়ে দেব, যে বাড়ি থেকে সে বের হয়েছিল।’ সেই মহান সত্তার শপথ, যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ আছে! আল্লাহর পথে দেহে যে কোন জখম পৌঁছে, কিয়ামতের দিনে তা ঠিক এই অবস্থায় আগমন করবে যে, যেন আজই জখম হয়েছে। (টাটকা জখম ও রক্ত ঝরবে।)

তার রং তো রক্তের রং হবে, কিন্তু তার গন্ধ হবে কস্তুরীর মত। সেই মহান সত্তার কসম, যার হাতে মুহাম্মদের জীবন আছে! যদি মুসলিমদের জন্য কষ্টের আশংকা না করতাম, তাহলে আমি কখনো এমন মুজাহিদ বাহিনীর পিছনে বসে থাকতাম না, যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে। কিন্তু আমার এ সঙ্গতি নেই যে, আমি তাদের সকলকে বাহন দিই এবং তাদেরও (সকলের জিহাদে বের হওয়ার) সঙ্গতি নেই। আর (আমি চলে গেলে) আমার পিছনে থেকে যাওয়া তাদের জন্য কষ্টকর হবে। সেই মহান সত্তার কসম, যার হাতে মুহাম্মদের জীবন আছে! আমার আন্তরিক ইচ্ছা যে, আমি আল্লাহর পথে লড়াই করি এবং শহীদ হই। অতঃপর আবার (জীবিত হয়ে) লড়াই করি, পুনরায় শাহাদত বরণ করি। অতঃপর (পুনর্জীবিত হয়ে) যুদ্ধ করি এবং পুনরায় শহীদ হয়ে যাই।” (বুখারী কিদয়ংশ, মুসলিম) [1]

[1] সহীহুল বুখারী ৩১২৩, মুসলিম ১৮৭৬, ৩৬২৩৭, ২৭, ৮৭, ২৭৯৭, ২৮০৩, ২৯৭২, ৩১২৩, ৫৫৩৩, ৭২২৬, ৭২২৭, ৭৪৫৭, ৭৪৬৩, তিরমিযী ১৬৫৬, নাসায়ী ৩০৯৮, ৩১২২, ৩১২৪, ৩১৪৭, ৩১৫১, ৩১৫২, ৫০২৯, ৫০৩০, ইবনু মাজাহ ২৭৫৩, ২৭৯৫, আহমাদ ৭১১৭, ৭২৬০, ৭২৯৮, ৮৭৫৭, ৮৮৪৩, ৮৯৪০, ৯১৯২, ৯৭৭৬, মুওয়াত্তা মালিক ৯৭৪, ৯৯৯-১০০১, ১০২২, দারেমী ২৩৯১, ২৪০৬

আল্লাহর রাস্তায় ১রাত্রি পাহারা দেওয়া ১মাস নফল ইবাদাতের সমান।

(1)১২৯৯। সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, “একদিন ও একরাত সীমান্ত প্রহরায় রত থাকা, একমাস ধরে (নফল) রোযা পালন তথা (নফল) নামায পড়া অপেক্ষা উত্তম। আর যদি ঐ অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে, তাহলে তাতে ঐ সব কাজের প্রতিদান দেওয়া হবে, যা সে পূর্বে করত এবং তার বিশেষ রুযী চালু করে দেওয়া হবে এবং তাকে (কবরের) ফিতনা ও বিভিন্ন পরীক্ষা হতে মুক্ত রাখা হবে।” (মুসলিম)

(2)১৩০০। ফাযালা ইবনে উবাইদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “প্রতিটি মৃত্যুগামী ব্যক্তির পরলোকগমনের পর তার কর্মধারা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু আল্লাহর রাস্তায় পাহারা রত ব্যক্তির নয়। কেননা, তার আমল কিয়ামতের দিন পর্যন্ত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত করা হবে এবং সে কবরের পরীক্ষা থেকে নিষ্কৃতি পাবে।” (আবূ দাউদ-তিরমিযী হাসান সহীহ)

(3)১৩০১। উসমান ইবনে আফ্‌ফান রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “আল্লাহর পথে একদিন সীমান্তে পাহারা দেওয়া, অন্যত্র হাজার দিন পাহারা দেওয়া অপেক্ষা উত্তম।” (তিরমিযী তিনি বলেন হাদিসটি উত্তম ও বিশুদ্ধ)

নোট:-
[1] মুসলিম ১৯১৩, তিরমিযী ১৬৬৫, নাসায়ী ৩১৬৭, ৩১৬৮, আহমাদ ২৩২১১৫, ২৩২২৩

[2] আবূ দাউদ ২৫০০, তিরমিযী ১৩২১

[3] তিরমিযী ১৬৬৭, নাসায়ী ৩১৬৯, ৩১৭০, আহমাদ ৪৪৪, ৪৭২, ৪৭৯, ৫৫৯, দারেমী ২৪২৪

আল্লাহর পথে জিহাদ উত্তম

(১)১২৯৪। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নিবেদন করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! মহান আল্লাহর নিকট কোন কাজটি সর্বাধিক প্রিয়?’ তিনি বললেন, “যথা সময়ে নামায আদায় করা।” আমি নিবেদন করলাম, ‘তারপর কোনটি?’ তিনি বললেন, “মা-বাপের সাথে সদ্ব্যবহার করা।” আমি আবার নিবেদন করলাম, ‘তারপর কোনটি?’ তিনি বললেন, “আল্লাহর পথে জিহাদ করা।” (বুখারী ও মুসলিম)

(২)১২৯৫। আবূ জর রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নিবেদন করলাম, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! সর্বোত্তম আমল কি?’ তিনি বললেন, “আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখা ও তাঁর রাস্তায় জিহাদ করা।” (বুখারী ও মুসলিম)

(৩)১২৯৭। আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একটি লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে এই নিবেদন করল যে, ‘সব চাইতে উত্তম ব্যক্তি কে?’ তিনি বললেন, “সেই মুমিন ব্যক্তি, যে নিজ জান-মাল দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে।” সে বলল, ‘তারপর কে?’ তিনি বললেন, “সেই মুমিন, যে পার্বত্য ঘাঁটির মধ্যে কোন ঘাটিতে আল্লাহর ইবাদতে প্রবৃত্ত থাকে ও জনগণকে নিজের মন্দ থেকে মুক্ত রাখে।” (বুখারী ও মুসলিম) [1]

[3] সহীহুল বুখারী ২৭৮৬, ৬৪৯৪, মুসলিম ১৮৮৮, তিরমিযী ১৬৬০, নাসায়ী ৩১০৫, আবূ দাউদ ২৪৮৫, ইবনু মাজাহ ৩৯৭৮, আহমাদ ১০৭৪১, ১০৯২৯, ১১১৪১, ১১৪২৮

[2] সহীহুল বুখারী ২৫১৮, মুসলিম ৮৪, নাসায়ী ৩১২৯, ইবনু মাজাহ ২৫২৩, আহমাদ ২৩৮৪৫, ২০৯৩৮, ২০৯৮৯, দারেমী ২৭৩৮

[1] সহীহুল বুখারী ৫২৭, ২৭৮২, ৫৯৭০, ৭৫৩৮, মুসলিম ৮৫, তিরমিযী ১৩৭, ১৮৯৮, নাসায়ী ৬১০, ৬১১, আহমাদ ৩৮৮০, ৩৯৬৩, ৩৯৮৮, ৪১৭৫, ৪২১১, ৪২৩১, ৪২৭৩, ৪৩০১, দারেমী ১২২৫

আল্লাহর পথে জিহাদ করা ওয়াজিব।

জিহাদ ওয়াজিব এবং তাতে সকাল-সন্ধ্যার মাহাত্ম্য

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿ وَقَاتِلُوا المُشْرِكِينَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَافَّةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللهَ مَعَ المُتَّقِينَ ﴾ ( التوبة: ৩৬ )

অর্থাৎ আর অংশী-বাদীদের সকলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, যেমন তারা তোমাদের সকলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। আর জেনে রেখো যে, আল্লাহ মুত্তাকীগণের সাথে রয়েছেন। (সূরা তাওবাহ ৩৬ আয়াত)

তিনি অন্যত্র বলেছেন,

﴿كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَكُمْ ۖ وَعَسَىٰ أَنْ تَكْرَهُوا شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَكُمْ ۖ وَعَسَىٰ أَنْ تُحِبُّوا شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَكُمْ ۗ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ﴾ (البقرة: ٢١٦) 

অর্থাৎ তোমাদের জন্য যুদ্ধের বিধান দেওয়া হল। যদিও এটা তোমাদের কাছে অপছন্দ; কিন্তু তোমরা যা পছন্দ কর না সম্ভবত: তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং তোমরা যা পছন্দ কর সম্ভবত: তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না। (সূরা বাকারাহ ২১৬ আয়াত)

তিনি আরও বলেছেন,

﴿ انْفِرُوا خِفَافًا وَثِقَالًا وَجَاهِدُوا بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ ﴾ [التوبة: ٤١] 

“দুর্বল হও অথবা সবল সর্বাবস্থাতেই তোমরা বের হও এবং আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দ্বারা জিহাদ কর।” (সূরা তাওবাহ ৪১ আয়াত)

তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন,

﴿إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَىٰ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ۚ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ ۖ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ وَالْقُرْآنِ ۚ وَمَنْ أَوْفَىٰ بِعَهْدِهِ مِنَ اللَّهِ ۚ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُمْ بِهِ ۚ وَذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ﴾ [التوبة: ١١١]

“নিঃসন্দেহে আল্লাহ মুমিনদের নিকট থেকে তাদের প্রাণ ও তাদের ধন-সম্পদসমূহকে জান্নাতের বিনিময়ে ক্রয় করে নিয়েছেন; তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে, যাতে তারা হত্যা করে এবং নিহত হয়ে যায়। এ (যুদ্ধে)র দরুন (জান্নাত প্রদানের) সত্য অঙ্গীকার করা হয়েছে তাওরাতে, ইঞ্জিলে এবং কুরআনে; আর নিজের অঙ্গীকার পালনে আল্লাহ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর অন্য কে আছে? অতএব তোমরা আনন্দ করতে থাক তোমাদের এই ক্রয়-বিক্রয়ের উপর যা তোমরা সম্পাদন করেছ। আর এটা হচ্ছে মহা সাফল্য।” (সূরা তাওবাহ ১১১)

তিনি অন্যত্র বলেছেন,

﴿لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ غَيْرُ أُولِي الضَّرَرِ وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ ۚ فَضَّلَ اللَّهُ الْمُجَاهِدِينَ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ عَلَى الْقَاعِدِينَ دَرَجَةً ۚ وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ الْحُسْنَىٰ ۚ وَفَضَّلَ اللَّهُ الْمُجَاهِدِينَ عَلَى الْقَاعِدِينَ أَجْرًا عَظِيمًا دَرَجَاتٍ مِنْهُ وَمَغْفِرَةً وَرَحْمَةً ۚ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا﴾ (النساء : ٩٥) 

অর্থাৎ ঈমানদারদের মধ্যে যারা অক্ষম নয় অথচ ঘরে বসে থাকে তারা এবং যারা আল্লাহর পথে স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে, তারা সমান নয়। যারা স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে আল্লাহ তাদেরকে যারা ঘরে বসে থাকে তাদের উপর মর্যাদা দিয়েছেন; আল্লাহ সকলকেই কল্যাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আর যারা ঘরে বসে থাকে তাদের উপর যারা জিহাদ করে তাদেরকে আল্লাহ মহা পুরস্কার দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। এ তাঁর (আল্লাহর) তরফ হতে মর্যাদা, ক্ষমা ও দয়া। বস্তুতঃ আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা নিসা ৯৫-৯৬ আয়াত)

তিনি আরও বলেছেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ هَلۡ أَدُلُّكُمۡ عَلَىٰ تِجَٰرَةٖ تُنجِيكُم مِّنۡ عَذَابٍ أَلِيمٖ ١٠ تُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَتُجَٰهِدُونَ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ بِأَمۡوَٰلِكُمۡ وَأَنفُسِكُمۡۚ ذَٰلِكُمۡ خَيۡرٞ لَّكُمۡ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ١١ يَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡ وَيُدۡخِلۡكُمۡ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ وَمَسَٰكِنَ طَيِّبَةٗ فِي جَنَّٰتِ عَدۡنٖۚ ذَٰلِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِيمُ ١٢ وَأُخۡرَىٰ تُحِبُّونَهَاۖ نَصۡرٞ مِّنَ ٱللَّهِ وَفَتۡحٞ قَرِيبٞۗ وَبَشِّرِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ١٣ ﴾ (الصف: ١٠،  ١٣) 

অর্থাৎ হে ঈমানদারগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দিব না, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হতে রক্ষা করবে?  (তা এই যে,) তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলে বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা জানতে। আল্লাহ তোমাদের পাপ-রাশিকে ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে; যার নিম্নদেশে নদীমালা প্রবাহিত এবং (প্রবেশ করাবেন) স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহা সাফল্য। আর তিনি তোমাদেরকে দান করবেন বাঞ্ছিত আরও একটি অনুগ্রহ; আল্লাহর সাহায্য ও আসন্ন বিজয়। আর বিশ্ববাসীদেরকে সুসংবাদ দাও। (সূরা সাফ্ ১০-১৩ আয়াত)

এ মর্মে প্রসিদ্ধ বহু আয়াত রয়েছে। আর জিহাদের ফযীলত সংক্রান্ত হাদিসও রয়েছে অগণিত। তন্মধ্যে কতিপয় নিম্নরূপ:-

১/১২৯৩। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা হল, ‘সর্বোত্তম কাজ কি?’ তিনি বললেন, “আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।” জিজ্ঞাসা করা হল, ‘তারপর কি?’ তিনি বললেন, “আল্লাহর পথে জিহাদ করা।” পুনরায় জিজ্ঞাসা করা হল, ‘অতঃপর কি?’ তিনি বললেন, “মাবরূর’ (বিশুদ্ধ বা গৃহীত) হজ্জ।” (বুখারী-মুসলিম) [1]

 

[1] সহীহুল বুখারী ২৬, ১৫১৯, মুসলিম ৫৩, তিরমিযী ১৬৫৮, নাসায়ী ২৬২৪, ৩০৩০, আহমাদ ১২৮১ এর সবগুলো, দারেমী ২৩৯৩

Friday, October 7, 2016

পানাহারের আদব-১

১০০: শুরুতে বিস্মিল্লাহ এবং শেষে আল-হামদু লিল্লাহ বলা

২/৭৩৩। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমাদের কেউ যখন আহার করবে, সে যেন শুরুতে আল্লাহ তা‘আলার নাম নেয়। যদি শুরুতে আল্লাহর নাম নিতে ভুলে যায়, তাহলে সে যেন বলে ‘বিসমিল্লাহি আওয়ালাহু অ আখেরাহ।’’ (আবূ দাঊদ, তিরমিযী-হাসান সহীহ)[1]

[1] আবূ দাউদ ৩৭৬৭, তিরমিযী ১৮৫৮, ইবনু মাজাহ ৩২৬৪, আহমাদ ২৫২০৫, ২৫৫৫৮, ২৫৭৬০, দারেমী ২০২০

পানাহারের আদব

শুরুতে বিস্মিল্লাহ এবং শেষে আল-হামদু লিল্লাহ বলা

১/৭৩২। উমার ইবনে আবূ সালামাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, (একদা খাবার সময়) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, ‘‘(শুরুতে) ‘বিসমিল্লাহ’ বল, ডান হাত দ্বারা আহার কর এবং তোমার নিকট (সামনে) থেকে খাও।’’ (বুখারী)[1]

[1] সহীহুল বুখারী ৫৩৭৬, ৫৩৭৭, ৫৩৭৮, মুসলিম ২০২২, আবূ দাউদ ৩৭৭৭, ইবনু মাজাহ ৩২৬৭, আহমাদ ১৫৮৯৫, ১৫৯০২, মুওয়াত্তা মালেক ১৩৩৮, দারেমী ২০১৯, ২০৪৫